আত্মবিলাপ
আজ ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত
বিবেকের কারাগারে বন্দী।
কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা,
ফেলানী আমাকে প্রশ্ন করে।
সমুদ্র সৈকতে ঘুমিয়ে থাকা ,
আলিয়ান কুর্দি আমায় প্রশ্ন করে,
কি ছিল তাদের অপরাধ?
আমি কিছুই বলতে পারি না
উত্তর দিতে পারি না।
নুসরাত, নাদিয়া,তনু,খাদিজারা
আর্তনাদ করে জানতে চায়,
কি ছিল তাদের অপরাধ?
আমার চোখ জলে সিক্ত হয়,
আমি বিবেকের দংশনে বারবার
দগ্ধ হতে থাকি,সন্তপ্ত হতে থাকি।
কিছুই করতে পারি না,পারি না।
বাসে ধর্ষিতা মাজেদা ,
ফুপাতো ভাইয়ের হাতে
কেরোসিনে মৃত ফুলন,
ভাইয়ের সামনে ধর্ষিতা বোন ,
ছেলের সামনে বলাৎকৃতা মা,
পাঁচ মাসের ধর্ষিতা শিশু,
জন্মের আগেই সন্ত্রাসীদের হাতে
যে শিশু মৃত্যুকে করে আলিঙ্গন ,
সবাই ,সবাই আমাকে প্রশ্ন করে।
আমি উদ্বিগ্ন হই,অবসাদগ্রস্ত হই।
সায়মার বুক ফাটা আর্তনাদ ,
আমাকে সর্বক্ষণ প্রশ্ন করে,
প্রশ্ন করে আর কত সায়মাকে
বাংলার সোনার ছেলেদের
হিংস্রতার আর বর্বরতার
শিকার হতে হবে?
আর কত সায়মা আত্মাহুতি দিলে
এসব সোনার ছেলেরা,
তাদের অসুস্থ মানসিকতা থেকে
বের হয়ে আসবে?
পতিতালয় কাদের জন্য
কারো কি জানা আছে?
না ,তারা পতিতালয়ে কেন যাবে?
একজন অসহায় শিশু, বালিকা
আর বৃদ্ধার উপর জোর খাটিয়ে ,
যে অসুস্থ তৃপ্তির ঢেকুর তোলে তারা
যে অসভ্য পুরুষত্বের শক্তিকে
জাহির করতে পারে,
তাতে করে তারা যে, অসুস্থ আনন্দের
আস্বাদ গ্রহণ করে,
তা কি পতিতালয়ে পাওয়া যাবে?
আমি কি জবাব দিব?
আমি যেন আজ বিবেকের
কারাগারে বন্দী এক পাখি।
শুধু ছটফট করি,ছটফট করি।
আমি তমসার শ্রীঘরে
নিমজ্জিত অসহায় এক মানবী।